চাঁদপুর হাজীগঞ্জে মৃত বোনকে জীবিত সাজিয়ে ভগ্নিপতিকে ভুয়া তালাক দেয়াসহ বিভিন্ন প্রতারণা মামলার প্রধান আসামি আল আমিন লিটনকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে আদালত।
১১ আগস্ট বুধবার সকালে চাঁদপুর আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. সফিকুল ইসলাম আসামীর জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
আসামী আল আমিন লিটন হাজীগঞ্জ উপজেলার মকিমাবাদ খাটরা বিলওয়াই এলাকার আব্দুল লতিফ মিয়ার পুত্র। মামলার অন্য আসামীরা হলেন, মোঃ হাবিবুর রহমান জীবন, সালমা সুলতানা কুমকুম, জান্নাতুল ফেরদৌসী, মো. শাহিন, আবুল হোসেন, মো. গিয়াস উদ্দিন, বিলকিস বেগম।
চাঁদপুর আদালতের হাজীগঞ্জ উপজেলার জিআরও থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, আসামিদের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা মামলা রয়েছে। যার মামলা নং জিআর ১৯২। ধারা ৪০৬/ ৪২০/ ৪৬৫/ ৪৬৭/ ৪৬৮ ও ৪৭১/৩৪।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, শাহরাস্তি উপজেলার মো. গিয়াস উদ্দিন (৪৫) এর স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা রয়েলী আক্তার ২০২০ সালের ২২ জুলাই শ্বাসকষ্ট জনিতে অসুখে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। করোনার থাবায় স্ত্রীকে হারিয়ে পাগল প্রায় স্বামী গিয়াস উদ্দিন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। এই সুযোগে রয়েলী আক্তারের ভাই আল আমিন লিটন ও হাবিবুর রহমান জীবন বোনের সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য নানা রকম ষড়যন্ত্র শুরু করে।
তারা উল্লেখিত আসামীদের সাথে নিয়ে মৃত বোনের সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য ভুয়া ওয়ারিস সনদ তৈরী এবং পোস্ট অফিসের এডি জাল করে, ভুয়া তালাকনামা তৈরী করে বোন জামাইর বিরুদ্ধে পরপর ৪টি মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং সিআর ২৭১/২০২১, জিআর ২৩২/২০২১।
শুধু তাই নয়, সম্পত্তির লোভে রায়েলি আক্তারের মৃত্যুর পরে অন্য নারীকে রয়েলি আক্তার সাজিয়ে জাল তালাকনামা তৈরী করে প্রতারণা করেন।
এর থেকে রেহাই পেতে মৃত রয়েলী আক্তারের স্বামী মোঃ গিয়াস উদ্দিন চাঁদপুর আদালতে একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন। যার সিআর ২৯৬/ ২০২১ এবং জিআর ১৯২ /২০২১।
এদিকে আদালত মামলার তদন্তের জন্যে প্রথমে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশকে দায়িত্ব দেয় এবং পরবর্তীতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিকে দায়িত্ব হস্তান্তর করে। গত ২৬ জুলাই চাঁদপুর সিআইডি’র উপ-পরিদর্শক আবু জাহিদ তুহিন সংঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে মামলার ৪ আসামীকে আটক করে।
মামলার বাদি মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, শুধুমাত্র সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য আমার স্ত্রীর ভাই জীবন সহ উল্লেখিত আসামিরা আমার বিরুদ্ধে পরপর ৪টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তারা আমার স্ত্রীর মৃত্যুর পরে অন্য একজন নারীকে আমার স্ত্রী সাজিয়ে চাঁদপুরে এসে ওমর ফারুক নামে একজন কাজীরর মাধ্যমে ভুয়া তালাকনামা তৈরী করে আমাকে তালাক দেয়। কতো বড় জঘন্য মনের মানুষ হলে তারা এই কাজটি করতে পারে। আমি মহামান্য আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপরোক্ত আসামীরা তাদের পিতা সম্পত্তি আত্মসাত করতেও জাল দলিল তৈরী করেছিলো। যার কারনে তাদের আপন পিতা মৃত আব্দুল লতিফ মিয়া জীবদ্দশায় ছেলেদের (১ ও ২নং আসামী) বিরুদ্ধে দরখাস্ত মোকদ্দমা ৭২/২০২০, নন জিআর ৫৪/২০২০ এবং দেওয়ানী ৫১/২০২০ যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে মামলা দায়ের করেন
বাংলাদেশ সময়: ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট ২০২১
protidin-somoy.com | anayet mojomdar
Development by: webnewsdesign.com