স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যদের বক্তব্য ভিত্তিহীন এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ চেয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে সংসদে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট পাসের সময় বিরোধী সদস্যদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাদের দায়িত্ব নিতে বলেন। এ সময় ঢালাও অভিযোগ ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলেও উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই স্বাস্থ্য খাতের বেশকিছু অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এসব অনিয়মের কথা তুলে ধরেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। কিন্তু স্বাস্থ্যখাতে এসব অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ অস্বীকার করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, আমার এলাকার হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তার, এক্স-রে মেশিন ও রেডিওলজিস্ট নেই। এসব কবে পাব? স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে যতবার বলি উনি ডিও লেটার দিতে বলেন। কতবার ডিও লেটার দেবো?
স্বাস্থ্যখাতে মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ দাবি সম্পর্কে পীর ফজলুর রহমান বলেন, চলমান বরাদ্দের টাকাই খরচ করতে পারেননি। ফের বরাদ্দ চেয়েছেন।
জাপার আরেক সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় টাকা খরচ করতে না পেরে ফেরত দিয়েছে। আমরা তা চাই না। খরচ করতে না পারলে ৩৫০ জন এমপিকে ভাগ করে দেন। আমরা খরচ করি। স্বাস্থ্যসেবা আমরা দেখবো। আপনাদের দরকার নেই। ডাক্তার-নার্স নিয়োগ করতে পারছেন না। ৩৫০ এমপিকে দায়িত্ব দেন। আমরা নিয়োগের ব্যবস্থা করি।
বিএনপির রুমিন ফারহানা স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ২৫ শতাংশ। এই যে বরাদ্দ দিচ্ছি সেটা কোথায় যাচ্ছে? বরাদ্দ খরচ করার সক্ষমতা মন্ত্রণালয়ের আছে কি-না সেই প্রশ্ন চলে আসছে।
বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, স্বাস্থ্যখাত সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতি দূর করতে ডালপালা কেটে লাভ নেই। গাছের শেকড় উপড়ে ফেলতে হবে। স্বাস্থ্যের কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। দুর্নীতি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।
জাতীয় সংসদে বিএনপির মোশাররফ হোসেন, জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী, মুজিবুল হক চুন্নু স্বাস্থ্যের বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরেন। এছাড়াও করোনাভাইরাসের টিকার অপ্রতুলতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিরোধী দলের সদস্যরা।
বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আপনারা হাসপাতালের চেয়ার। আপনাদের দায়িত্ব আছে। আপনাদের দায়িত্ব নিতে হবে। দুর্নীতির অভিযোগেরও জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মাস্ক নিয়ে কথা বলছেন। মাস্ক তো কেনাই হয়নি। তার পেমেন্ট দেওয়া হয়নি। ঢালাও অভিযোগ দিলে তো বলবে না। এসময় জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের বেঞ্চ থেকে হইচই হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেন জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সদস্যরা।
মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সুনির্দিষ্ট করে বলতে হবে। ঢালাওভাবে অনিয়মের কথা বললে গ্রহণযোগ্য হবে না। সুনির্দিষ্ট বলতে হবে, কোথায় দুর্নীতি হয়েছে?
বাংলাদেশ সময়: ৮:২০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ জুলাই ২০২১
protidin-somoy.com | anayet mojomdar
Development by: webnewsdesign.com