ছুটির দিনের সন্ধ্যায় হাইকোর্টের দেয়া এক স্বপ্রণোদিত আদেশের পর পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ রাতেই বাবার গুলশানের বাড়িতে উঠতে পারলেন দুই বোন।
প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরা তাদের বাবার গুলশানের বাড়িতে ঢুকতে পারছেনা জেনে সোমবার সন্ধ্যায় এবিষয়ে স্বপ্রণোদিত আদেশ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালত তার আদেশে, অনতিবিলম্বে পুলিশ প্রহরায় তাদের বাড়িতে প্রবেশের ব্যবস্থা করতে গুলশান থানার ওসির প্রতি নির্দেশ দেন। এছাড়া আগামী ১ নভেম্বর পর্যন্ত ওই বাড়ির সামনে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতেয়েন করে দুই বোনকে নিরাপত্তা দিতে বলা হয়। সেই সাথে ১ নভেম্বর সকাল সাড়ে দশটায় ওই দুই বোন ও আঞ্জু কাপুরকে সহ গুলশান থানার ওসিকে হাইকোর্টে উপস্থিত হতে বলা হয়। আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
এদিকে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরাকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ তাদের বাবার বাড়িতে ওঠিয়ে দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ প্রতিপালনের বিষয়টি রাত ৯ টা ৪০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রাহমানকে গুলশান থানার ওসি অবগত করেন।
রাজধানীর গুলশান-২ এর ৯৫ নম্বর সড়কে প্রায় ১০ কাঠা জমির ওপর বাড়ি। এ বাড়ির গৃহকর্তা মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ গত ১০ অক্টোবর মারা যান। এরপরই বাড়ির মালিকানা নিয়ে বিরোধের শুরু। প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ পেশায় পাইলট ছিলেন। যে জমির ওপর তার বাড়িটি, সেটি তার মায়ের ছিল। আর এই বাড়িটির পেছনে তার ভাইবোনদের প্লট রয়েছে। ভাইবোনদের মধ্যে সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ ছাড়া কেউ এখন দেশে নেই। বাবার বাড়িতে ঢুকতে না পারার বিষয়ে মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরা গণমাধ্যমকে জানান, ‘গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত তারা ওই বাড়ির সামনে ছিলেন।বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেও তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
এই দুই বোন গণমাধ্যমকে জানান, ‘তাদের জন্ম ও শৈশবের বড় অংশ এই বাড়িতে কেটেছে। ২০০৫ সালে তাদের মা–বাবার বিচ্ছেদ হয়। পরে তারা কখনো মায়ের সঙ্গে, কখনো বাবার সঙ্গে থাকতেন। ২০১৩ সালে মুশফিকা উচ্চতর লেখাপড়ার জন্য দেশ ছাড়েন। পরবর্তী ছয় বছর তিনি এই বাসায় অনিয়মিত হয়ে পড়েন। আর ছোট বোন মোবাশ্বেরা বিয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। আমারা বাইরে থাকা অবস্থায় বাবা বলেছিলেন, আঞ্জু কাপুর নামের একজন সেবিকা তাকে দেখাশোনা করছেন। পরে আঞ্জু কাপুর নিজেকে তাদের বাবার স্ত্রী বলে দাবি করেন। তিনি একাই এখন এই বাড়ির ভোগদখল করছেন। তিনি কিছুতেই বাড়িতে তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন না।
অন্যদিকে, প্রয়াত মোস্তফা জগলুলের ছোটবেলার বন্ধু ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ওয়াজিউল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বেঙ্গালুরুর মেয়ে (তখন ঢাকায় থাকতেন) আঞ্জু কাপুরের সাথে মোস্তফা জগলুলের স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টে বিয়ে হয়। ২০১৬ সালে মোস্তফা জগলুল অছিয়ত করেন, তাঁর স্ত্রী আঞ্জু কাপুর সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ পাবেন। আঞ্জু কাপুরকে তিনি এখন আইনগত সহযোগিতা দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর ২০২০
protidin-somoy.com | anayet mojomdar
Development by: webnewsdesign.com