ব্রেকিং নিউজ

x


মন্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ায় জড়ালেন কঙ্গনা

শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৮:১২ পূর্বাহ্ণ

মন্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ায় জড়ালেন কঙ্গনা

মানালি থেকে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে পা রাখতেই খবর পান মুম্বাইয়ের পালি হিলে তার বাড়ি ও অফিস ভাঙছে সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা। এরপরই শিবসেনা বনাম কঙ্গনা রানাওয়াতের ধারাবাহিক বাকযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। পরপর টুইটে শিবসেনাকে বাক্যবাণ ছুড়তে থাকেন অভিনেত্রী। অবশেষে মহারাষ্ট্রে বিজেপির হয়ে শিবসেনার সঙ্গে যুদ্ধে নেমেই পড়লেন তিনি।

একে একে ধ্বংসের ছবি টুইটারে পোস্ট করে গিয়েছেন কঙ্গনা। পৌরসভাকে পাকিস্তান বলেছেন। টুইট করেছেন, আমি ভুল বলিনি। আমার শত্রুরা বারবার প্রমাণ করে দিচ্ছেন যে মুম্বাই সত্যিই পাক অধিকৃত কাশ্মীর!‌ গণতন্ত্রের হত্যা হল!‌‌

বিমানবন্দরে ১১ জন সশস্ত্র সিআরপিএফ জওয়ানকে সঙ্গে করে নামেন বলিউড ‘‌কুইন’‌। বিমানবন্দরে কালো পতাকা নিয়ে হাজির ছিলেন বিপুল সংখ্যক শিব সৈনিক। এই সময়ে খবর আসে, মুম্বাই হাইকোর্ট তার বাড়ি ও অফিস ভাঙায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে। তবে ততক্ষণে ধূলিসাৎ ‘‌মণিকর্ণিকা ফিল্মস’‌–‌এর প্রবেশপথ। ভেঙেছে দেওয়ালের সাজ সরঞ্জাম। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে দামি আসবাব।

এদিকে, কঙ্গনার হয়ে নেমে পড়ে করণী সেনা, বিজেপি–‌র শরিক দল রিপাবলিকান পার্টিও।

পরে বাসভবনে ফেরেন কঙ্গনা রানাওয়াত এবং প্রায় ধ্বংসস্তূপ হয়ে যাওয়া ফ্ল্যাটের ভিডিও টুইট করেন। এরপরই এক ভিডিও মারফত একেবারে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে একহাত নেন কঙ্গনা। তুই তোকারি করে বলেন, ‘‌তোর কী মনে হয় উদ্ধব ঠাকরে, মাফিয়াদের সঙ্গে যোগসাজশ করে আমার বাড়ি ভেঙে প্রতিশোধ নিবি?‌ আজ আমার বাড়ি ভেঙেছে। কাল তোর দম্ভ ভাঙবে! সময়ের চাকা ঘোরে মনে রাখিস।’

যোগ করেছেন, ‘‌জানতাম এটাই হবে। এর কোনও অর্থ আছে নিশ্চয়। উদ্ধব ঠাকরে ভালই হল, এই নিষ্ঠুরতা, এই সন্ত্রাস আমার ওপর হল। জয় হিন্দ, জয় মহারাষ্ট্র!‌’‌

এর পরেই তিনি হঠাৎই কাশ্মীরি পণ্ডিতদের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন এখন তিনি অনুভব করতে পারছেন যে কাশ্মীরের পণ্ডিতদের অবস্থাটা কী।

তার সঙ্গে মহারাষ্ট্র সরকার এবং মুম্বাই কর্পোরেশন- তথা এই দুটিরই ক্ষমতায় থাকা শিবসেনা দলের টুইট যুদ্ধটা শুরুও হয়েছিল এই কাশ্মীর প্রসঙ্গে, আরও নির্দিষ্টভাবে বললে, প্রসঙ্গটা ছিল পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর- যাকে ভারতে ‘পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর’ বা ‘পিওকে’ বলেই অভিহিত করেন বেশীরভাগ মানুষ।

সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত কেন মুম্বাই পুলিশ ঠিক মতো করেনি- সেই প্রশ্ন তুলে মুম্বাই শহরকে ‘পিওকে’র সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। এর পরই শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছিলেন অভিনেত্রী যে মুম্বাই শহরে থেকেই রোজগার করেন তাকে ‘পিওকে’র সঙ্গে কী করে তুলনা করেন?

মহারাষ্ট্রের আত্মাভিমান নিয়ে শিবসেনা দল সবসময়েই সচেতন। তারা হুমকিও দেয় যে মিজ রানাওয়াত শহরে ফিরলে বিমানবন্দরেই তার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হবে। তার পরই কিছুটা অদ্ভুতভাবেই কেন্দ্রীয় সরকার অভিনেত্রীর জন্য বিশেষ কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দলের ব্যবস্থা করে।

তার মধ্যেই বাড়িতে বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত নোটিস দেয় কর্পোরেশন- যেটা নিয়ন্ত্রণ করে শিবসেনা।

মুম্বাইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকার সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলছিলেন, ‘কঙ্গনা নামের এই মেয়েটি মহারাষ্ট্রকে হুমকি দিয়েছে, মুম্বাই পুলিশকে হুমকি দিয়েছে- মুম্বাই শহরকে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করেছে, বাবরের সেনারা তার বাড়ি ভাঙ্গছে বলে উল্লেখ করেছে। সে তো নিজেই শত্রু তৈরি করেছে।’

তার বাড়ি ভাঙার কারণ সম্বন্ধে মিসেস পেডনেকার বলেন, ওই বেআইনি নির্মাণ সম্পর্কে কর্পোরেশনের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল- খতিয়ে দেখে তারপর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

কঙ্গনা রানাওয়াত আর মহারাষ্ট্রের শিবসেনা সরকারের বিরোধের পেছনে আসলে রাজনীতিই দেখছেন বিশ্লেষকরা।

শিবসেনা আর বিজেপি দীর্ঘদিনের জোট সঙ্গী ছিল, কিন্তু কিছুদিন আগে বিজেপিকে বাদ দিয়ে কংগ্রেস এবং জাতীয়তাবাদী কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে শিবসেনা সরকার তৈরি করে। তার পর থেকে দুই প্রাক্তন জোটসঙ্গীর কেউই অন্যপক্ষকে হেনস্থা করার সুযোগ ছাড়ে না।

বাংলাদেশ সময়: ৮:১২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০

protidin-somoy.com |

Development by: webnewsdesign.com