যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ এনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে ভোট গণনা বন্ধ করতে হুঙ্কার দিয়েছেন।
নির্বাচনের পর বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো দেয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস ও টুইটারে লিখেছেন ‘গণনা বন্ধ করুন’। এর ঘণ্টা খানেকের মধ্যে দেয়া আরেক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘নির্বাচনের পরের দিনের কোনো ভোট গণনা করা যাবে না।’
ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন আহ্বান জানিয়েছেন সবগুলো ভোট গণনার জন্য।
অবশ্য ট্রাম্পের এই টুইটের কয়েক মিনিটের মধ্যেই তার এক সাবেক শীর্ষ উপদেষ্টা কেলিয়ানি কনওয়ে সবাইকে ধৈর্য্যধারণ ও সবভোট গণনার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে ভোটের রাতে নিজেকে জয়ী বলে দাবি করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করে আসছেন, ভোটের রাতের ফল ঘোষণা করতে হবে।
এটি স্পষ্ট নয় যে ট্রাম্প কোনও নির্দিষ্ট রাজ্যের ভোট গণনা বন্ধ করেছেন কি না। যেহেতু তার প্রচারে সময় জো বাইডেন যে জায়গাগুলি এগিয়ে রয়েছে সেখানেও প্রতিটি ব্যালট গণনা করার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিলেন তিনি। আর যদি গণনা বর্তমানে যেখানে পৌঁছেছে সে হিসেবে বাইডেন অ্যারিজোনা এবং নেভাদায় জিতে যাবেন। ফলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে যে কয়টি ইলেক্টরাল ভোটের দারকার বাইডেনের তা তিনি পেয়ে যাবেন।
ট্রাম্পের সাবেক শীর্ষ উপদেষ্টা কেলিয়ানি কনওয়ে ধৈর্য্যধারণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা কেন আগে থেকেই এই নির্বাচন শেষ করতে এত তাড়াহুড়ো করছি? ধৈর্য ধরুন। দীর্ঘ নিঃশ্বাস নেওয়া যাক। প্রতিটি বৈধ ভোট গণনা করা হোক। আমি মনে করি সময় এখন পদ্ধতি ভিত্তিক হওয়ার এবং সংবেদনশীল হওয়ার নয়।’
যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফলাফল এখনও ঝুলে আছে হাতে গোনা কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে জয়-পরাজয়ে। এখন পর্যন্ত ভোটগণনা শেষ হয়নি সেসব অঙ্গরাজ্যে। তার মধ্যে অন্তত চারটিতে ভোটগণনা বন্ধে আদালতে মামলা করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শেষ খবর পর্যন্ত ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৪৩টির ফলাফলে বাইডেন জিতেছেন ২৪৩টি ইলেকটোরাল ভোট আর ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৪টি।
জিততে হলে একজন প্রার্থীকে মোট ইলেকটোরাল ভোট ৫৩৮টির মধ্যে ২৭০টি ভোট পেতে হবে।
বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উইসকনসিন, পেনসিলভিনিয়া, মিশিগান এবং জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে ভোটগণনা বন্ধের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন।
এরমধ্যে মিশিগানে জয় পেয়েছেন জো বাইডেন। উইসকনসিনেও বাইডেনের জয়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো। আর পেনসিলভিনিয়ার ভোট এখনও গণনা পর্যায়ে রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে এই চারটি অঙ্গরাজ্যের ভোটের ফলাফল নিজেদের দিকে নিতে আইনি লড়াই শুরু করে দিলো ট্রাম্প শিবির।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর আভাস ট্রাম্প আইনি লড়াইয়ে গেলে তা মোকাবেলা করার প্রস্তুতি রয়েছে বাইডেন শিবিরও।
এরই মধ্যে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ের জন্য ব্যপকভাবে অর্থ সংগ্রহ করছে ট্রাম্প শিবির।
নির্বাচনের পরের দিনই ট্রাম্প শিবির প্রচুর পরিমাণে তহবিল সংগ্রহ করতে শুরু করে। গত কয়েকমাস ধরে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সন্দেহের কথা জানিয়ে আসছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মধ্যরাত থেকে সমর্থকদের কাছে অর্থের জন্য ছয়টি ইমেল প্রেরণ করেছে ট্রাম্প শিবির। প্রতিটি অনুরোধে ডেমোক্র্যাটরা নির্বাচন ‘চুরি’ করার চেষ্টা করছে এমন দাবি করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে নির্বাচনের কারচুপি নিয়ে কোনো প্রমাণ তুলে ধরা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৬ নভেম্বর ২০২০
protidin-somoy.com | anayet mojomdar
Development by: webnewsdesign.com