ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় প্রাইভেটকারের নিচে নারীকে টেনে নিয়ে মেরে ফেলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় চালক আজহার জাফর শাহ পুলিশি হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ওসি নূর মোহাম্মদ। তিনি জানান, নিহত ৪৫ বছর বয়সী নারী রুবিনা আক্তারের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। আজ (শনিবার) মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
চালক আজহার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি চাকরিচ্যুত হন। দুর্ঘটনার পর মারধরে আহত হন তিনি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
ওসি বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে গতকাল (শুক্রবার) গভীর রাতে রুবিনা আক্তারের ভাই জাকির হোসেন সড়ক পরিবহণ আইনে মামলা করেছেন। রুবিনাকে গাড়ির নিচে টেনে নেওয়া চালক আজহার জাফর শাহকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রুবিনা আক্তার তার দেবর নূরুল আমিনের (৪০) বাইকে করে যাচ্ছিলেন। প্রাইভেটকারচালক পেছন থেকে তাদের ধাক্কা দেন। এ সময় ওই নারী প্রাইভেটকারের নিচে তার পোশাক বাম্পারে জড়িয়ে আটকা পড়েন। তাকে ঝুলিয়ে নিয়ে চালক নীলক্ষেতের দিকে যেতে থাকেন।
এ সময় নূরুল আমিন নিজেকে সামলে উঠে দাঁড়িয়ে দেখেন তার ভাবি গাড়ির নিচে এবং বেপরোয়া গতিতে ছুটে চলেছে গাড়িটি। এ অবস্থা দেখে তিনি গাড়ির পেছনে ছুটতে থাকেন। একপর্যায়ে টিএসসি এলাকায় থাকা লোকজন গাড়িটির পিছু নিয়ে থামানোর জন্য চিৎকার করতে থাকেন। এরপরও চালক জাফর শাহ গাড়ি থামাননি।
এক কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে নীলক্ষেত মোড় ঘুরে পলাশী অভিমুখী যাওয়ার সময় জনতা তাকে আটক করেন। পথচারীরা যখন রুবিনাকে উদ্ধার করেন, ততক্ষণে গাড়ির সঙ্গে তার আটকে থাকা দেহটি টেনে চালক এক কিলোমিটারের বেশি পথ চলে গেছেন। এতে তার শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। এ সময় টিএসসি থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত সড়কের কোথাও কোথাও তার দেহের পড়ে থাকা অংশ দেখা যায়।
পরে গাড়ির নিচ থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় জনতা গাড়ির চালককে গণপিটুনি দিয়ে মারাত্মক আহত করেন এবং গাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে পুলিশ এসে জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং চালককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২২
protidin-somoy.com | anayet mojomdar
Development by: webnewsdesign.com