ধর্মনিরপেক্ষতার মহান আদর্শকে রাষ্ট্রকাঠামোতে প্রতিষ্ঠা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধুমাত্র বাংলাদেশকেই নয়, গোটা উপমহাদেশকে শান্তি ও বৈষম্যহীন সমাজের সুদৃঢ় কাঠামোর ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন। তিনি আর এক দশক বেঁচে থাকলে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িকতার শেকড় চিরতরে বিলুপ্ত হতো। উপমহাদেশের সমকালীন রাজনীতিতে ধর্মীয় উগ্রবাদের যে বীভৎস রূপ আমরা দেখতে পাচ্ছি তাও আর দেখতে হতো না।
রোববার (১৫ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সেন্টার ফর বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া রিলেশনস (সিবিআইআর) আয়োজিত ‘ভারত ও বাংলাদেশের শেখ মুজিব’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে বিশিষ্টজনরা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন এবং এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে এই মূল্যায়ন তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ ও ভারতের রাজনীতি, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করা বিশিষ্টজনরা এই ওয়েবিনারে আন্তর্জাতিক স্তরে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশবিরোধী চক্রের ভয়ংকর চক্রান্তের নানা আঙ্গিক তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সাড়ে ৪ দশক পর একথা বলা আজ অত্যন্ত জরুরি যে, শুধুমাত্র বর্বর এই হত্যায় জড়িত কয়েকজন খুনিকে ফাঁসি দিলেই প্রকৃত কর্তব্য শেষ হয় না। এই হত্যাযজ্ঞের নেপথ্যে দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্রকারীদের তদন্ত করে রহস্য উন্মোচন অত্যন্ত জরুরি।
মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা দেওয়া ভারতকে এই ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচনে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে বন্ধুপ্রতীম দুই দেশের জ্যেষ্ঠ রাজনীতিকরা বলেন, বঙ্গবন্ধু নৃতাত্ত্বিকভাবে অভিন্ন বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে এমন একটি ভীতের ওপর দাঁড় করিয়ে গেছেন যে দেশ দুটির অভ্যন্তরীণ নানা রাজনৈতিক বিভক্তি সত্ত্বেও সুদৃঢ় এই সম্প্রীতিতে কেউ চিড় ধরাতে পারেনি। তাই বঙ্গবন্ধু ভারতে শুধু জনপ্রিয়ই নন, তার অসাম্প্রদায়িকতার আদর্শ আজকের ভারতেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
সিবিআইআর পরিচালক ও সাংবাদিক শাহিদুল হাসান খোকনের সঞ্চালনায় আন্তর্জাতিক এই ওয়েবিনারে বঙ্গবন্ধু স্মরণ আলোচনায় অংশ নেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দীপ্তিমান ঘোষ, প্রেসক্লাব অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গৌতম লাহিড়ী, নেতাজি বিশেষজ্ঞ ও পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. জয়ন্ত চৌধুরী, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অবঃ) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হারুন হাবীব, কবি ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সোহরাব হাসান, ভারতের বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশীষ চট্টোপাধ্যায় এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও এনএসজি’র প্রাক্তন কমান্ড্যান্ট দীপাঞ্জন চক্রবর্তী।
সাংবাদিক জয়ন্ত আচার্যের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে সিবিআইআর’র পক্ষে স্বাগত বক্তব্য দেন-গবেষণা বিভাগের প্রধান আশরাফুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ৭:২৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৬ আগস্ট ২০২১
protidin-somoy.com | anayet mojomdar
Development by: webnewsdesign.com