করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ ঋণ খেলাপিরা পাবেন না। এমনকি যে সব ঋণ খেলাপি বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেয়া সুযোগ নিয়ে ৩ বারের বেশি ঋণ পুনঃতফসিল করেছেন, তারাও এই প্রণোদনার অর্থ পাবেন না। শুধু ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প খাত এই অর্থ পাবে।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, যে সব শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠান করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শুধু সেসব প্রতিষ্ঠান এ সুবিধার আওতাভুক্ত হবে।
‘খেলাপি ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রহীতারা এ প্যাকেজের আওতায় ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা পাবে না। এ ছাড়া কোনো ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের কোন ঋণ বা বিনিয়োগ মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত হওয়ার পর ইতোপূর্বে ৩ বারের অধিক পুনঃতফসিলকৃত হলে এ ধরনের ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠান এ প্যাকেজের আওতায় ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা পাবে না।’
প্রধানমন্ত্রী গত ৫ এপ্রিল যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন, তার ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে টাকা জোগানোর জন্য।
এই তহবিল থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা ৯ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন। তবে তাদের ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হবে। বাকি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেবে।
ঋণের সীমা ও মেয়াদ
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের স্থিতির মধ্যে স্ব স্ব ব্যাংকের অবদান এবং সম্ভাব্য ঋণ চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি ব্যাংক এ প্যাকেজের আওতায় ঋণের নিজস্ব চাহিদা নির্ধারণ করবে। এটি এ প্যাকেজের আওতায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ঋণের প্রাথমিক সীমা হিসেবে বিবেচিত হবে।
ওই সীমার উপর ভিত্তি করে ব্যাংক তাদের ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। যেহেতু আলোচ্য প্যাকেজের আওতায় মোট তহবিলের পরিমাণ নির্ধারিত রয়েছে, সেহেতু ব্যাংক কর্তৃক ওই সীমা নির্ধারণের পর স্বল্পতম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনে ওই সীমা বাড়াতে বা কমাতে পারবে।
এ প্যাকেজের মেয়াদ হবে ৩ বছর। তবে কোনো একক গ্রাহকের অনুকূলে প্রদত্ত ঋণের জন্য সর্বোচ্চ এক বছর মেয়াদের জন্য এ প্যাকেজের আওতায় সরকার থেকে ভর্তুকি পাওয়া যাবে।
এ প্যাকেজের আওতায় তফসিলি ব্যাংকের নিজস্ব ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী ঋণ মঞ্জুরি অনুমোদিত হতে হবে। তবে প্রতিটি ঋণ বিতরণের পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ হতে সম্মতিপত্র গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের আওতায় ‘বিশেষ মনিটরিং ইউনিট’ নামে একটি ইউনিট থাকবে। এ প্যাকেজের আওতায় ঋণ বা বিনিয়োগ সংক্রান্ত যে কোন প্রয়োজনে তফসিলি ব্যাংকগুলোর ওই ইউনিটের সাথে যোগাযোগ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৩ এপ্রিল ২০২০
protidin-somoy.com | anayet mojomdar
Development by: webnewsdesign.com