বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা করোনা সংক্রমণ থেকে মানুষকে সচেতন করতে নিরলশ কাজ করছেন। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে পুলিশের ভুমিকা শ্রেষ্ঠ মানব সেবার নজির হয়ে থাকবে। স্বচক্ষে দেখছি জীবনের মায়া ত্যাগ করে পুলিশ সদস্যরা মানুষকে সচেতন করছেন। কে জানে এভাবে সচেতন করতে গিয়ে নিজেই হয়ত সংক্রমিত হচ্ছে।
কিন্তু নিজের বা পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে কোন পুলিশ সদস্যই নিজের কর্তব্য থেকে বিরত থাকার কথা শুনিনি। জাতি আপনাদের নিয়ে গর্বিত। এই মহান স্বাধীনতার মাসে জাতির পক্ষ থেকে আপনাদের সংগ্রামী অভিবাদন। সেলুট।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাবিশ্ব টালমাটাল। উন্নত দেশে সুবিধা হচেছ সরকার ঘোষণার সাথে সাথে জনসাধারণ তা মেনে চলে। বাংলাদেশে তা সম্ভব না। মানুষ শুনেও না। ২৬ মার্চ থেকে ছুটি ঘোষণার সাথে সাথে মানুষ পিপড়ার মত গ্রামে ছুটলো। একবার ভাবলোও না নিজে সংক্রমিত হয়ে পরিবারের সদস্যদের জন্য মৃত্যুর ঝুকি বহন করছেন।
সরকার বাধ্য হয়ে নিরাপত্তা বাহিনি মোতায়েন করে। বিশেষভাবে পুলিশ সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা মাঠে ঘাটে কাজ করছেন। প্রিয় পাঠক একবার ভাবুন আপনাদের সচেতন করতে পুলিশ সদস্যদের স্বেচ্ছায় করোনা সাগরে ঝাপ দিতে হচ্ছে।
গণমাধ্যমকর্মী হিসাবে সর্বদা পুলিশের দোষ খুঁজে বেড়াই। এখানেও হয়ত আমাদের কোন কোন সহকর্মী বলবেন এটা তার দায়িত্ব ও কর্তব্য। না এটা বলার সুযোগ নাই। করোনা রোগ থেকে সচেতন করা পুলিশের দায়িত্বের মধ্যে পরে কি। আমি বলবো না। এটা নাগরিক হিসাবে নিজেকে নিরাপদ রাখা প্রত্যেক মানুষের দায়িত্ব।
আর চিকিৎসকের দায়িত্ব চিকিৎসা করা। চিকিৎসক এবং রাজনীতিবিদদের প্রধান দায়িত্ব মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সবাইকে ছাপিয়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে পুলিশই প্রধান কাজটি করছেন। মানুষের বিপদের দিনে পাশে দাড়িয়ে ‘জনতার পুলিশ’ উপাধির যথার্থতা প্রমাণিত হয়েছে।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন রনি কর্মস্থলে পরিবার নিয়ে থাকেন না। প্রতিমূহর্তে নিজ বাসা থেকে খোজ-খবর নিচ্ছেন পরিবারের সদস্যগণ। যতক্ষণ বাহিরে থাকেন ততক্ষণই পরিবারের মাঝে আতংক ভর করে। তারপরও মানুষের কথা ভেবে পেশার কথা মাথায় রেখে কাজ করতে হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফজাল হোসেন জানান, স্বাধীনতা থেকে শুরু করে জাতির যে কোন ক্রান্তিলগ্নে পুলিশ নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে মানুষের জন্য আত্মনিয়োগ করে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে পুলিশই প্রথম হানাদারের দিকে গুলি ছুড়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিডর, ’৮৮র প্রলয়ংকরী বন্যা প্রতিটি ক্ষেত্রে পুলিশ জীবন বাজি রেখে কাজ করেছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে পুলিশ নিজেদের সর্বোচ্চ শ্রম ও চেষ্টা করছে। পাশাপাশি চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। পুলিশ কল্যাণ তহবিল থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে ।
পুলিশ মানুষকে সচেতন করেই দায়িত্ব শেষ করেনি। নিজেদের বেতনের টাকা থেকে ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে খাদ্য তুলে দিচ্ছে।
মানবদরদী সচেতন মাত্রই নিজের সাধ্যের মধ্যে মানুষের সেবা করছেন। কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশ যা করছে তা সর্বোচ্চ ত্যাগের নজির। জ্ঞান-বিজ্ঞানে সর্ব্বোচ্চ অগ্রসর হিসাবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ যেখানে নাস্তানাবুদ। বাংলাদেশ সরকার এখনো পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
এটা বলার সময় হয়ত এখনো হয়নি। তবে যদি সেটা হয় তাহলে বলতে হবে কেবল পুলিশের ভুমিকার কারনেই সম্ভব হয়েছে। সরকারী নির্দেশ পুলিশ স্বশরিরে পালন করার কারনেই তা সম্ভব হয়েছে।
জয়তু বাংলাদেশ পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১:৪৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২০
protidin-somoy.com | anayet mojomdar
Development by: webnewsdesign.com