রাজশাহীতে একদিনে মরে ভেসে উঠেছে ৬১৬ মেট্রিক টন মাছ। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১২ কোটি টাকা। হঠাৎ পানিতে অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর) এ অবস্থা হয়েছে বলে জানান মৎস বিভাগ।
মোজাম্মেল হক নামের এক চাষী বলেন, মোহনপুরে তার মোহনপুর ও বাগমারায় ৯টি পুকুর রয়েছে। মঙ্গলবার (০১ সেপ্টেম্বর) রাত ১২ টার দিকে তার মোহনপুরের একটি পুকুরের পাহারাদার খবর পাঠান পুকুরে মাছ লাফালাফি করছে। তিনি সাথে সাথে ছুটে গিয়ে দেখেন, পুকুরে সব মাছ তোলপাড় করছে। সেখানে তিনি রাত তিনটা পর্যন্ত ছিলেন। তিনি মাছের এই অবস্থা দেখে চিন্তায় তিনি একপ্রকার অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর চারটার দিকে দেখেন, পুকুরের পানি দেখা যাচ্ছে না। শুধু মাছ ভেসে সাদা হয়ে আছে। তার বাকি ৮টি পুকুরেরও একই অবস্থা হয়েছে। তার বাসায় ১০ কেজি অক্সিজেন ট্যাবলেট ছিল। পুকুরে অক্সিজেন ট্যাবলেট দিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
পবা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, পবায় ৩০৭ মেট্রিক টন মাছের ক্ষতি হয়েছে। এ মাছের আনুমানিক মূল্য ৭ কোটি টাকা। ২০-৩০ বছর ধরে যেসব চাষি মাছ চাষ করছেন তাঁরা বলছেন, এ রকম অবস্থা তাঁরা কখনো দেখেননি।
রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তারা প্রাথমিকভাবে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, জেলার মোট ৪ হাজার ৯৩০ জন চাষির মাছের ক্ষতি হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা। মঙ্গলবার সারা দিন আবহাওয়া গুমোট ছিল। পরেই আবার বৃষ্টি হয়। এসব কারণে পানিতে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। পবা উপজেলার চাষিদের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অলক কুমার সাহা বলেন, যেসব পুকুরে সিলভার কার্প জাতীয় মাছ ও কাতল বেশি চাষ করা হয়েছে, বেশি ক্ষতি হয়েছে সেইসব পুকুরের। যার কারণ, এই দুই জাতের মাছ পানির ওপরের স্তরের খাবার খায়। এই স্তরে উদ্ভিদ প্লংটন সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন তৈরি করে। এই দুই জাতের মাছ উদ্ভিদ প্লাংটন খেয়ে ফেলে। এতে অক্সিজেন তৈরির প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, সেই সঙ্গে আবহাওয়ার কারণে অক্সিজেন কমে এসেছিল। যেসব চাষি নিয়মিত পুকুরে জাল টানেন এবং যাঁরা অক্সিজেন বাড়ানোর জন্য অ্যারেটর যন্ত্র ব্যবহার করেছেন, তাঁদের ক্ষতি কম হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
protidin-somoy.com | anayet mojomdar
Development by: webnewsdesign.com