আমার স্বামী ১১ নম্বর বেডে ভর্তি ছিল। আগুন লাগার পর আমারা আতঙ্কিত হয়ে আমার স্বামীকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। তাড়াহুড়ো করে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার স্বামী পড়ে যায়। আমি আর আমার দেবর অক্সিজেনের জন্য হাসপাতালের বিভিন্ন তলায় ঘুরতে থাকি। শেষে অক্সিজেন না পেয়েই আমার স্বামী মারা গেছেন। কান্নারত অবস্থায় আরটিভি নিউজকে এভাবেই জানাচ্ছিলেন মৃত মাদরাসা শিক্ষক আব্দুল্লা আল মাহমুদের স্ত্রী ডালিয়া বেগম।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নতুন ভবনের করোনা ইউনিটে আগুন লাগার ঘটনায় রোগীদের স্থানান্তরের পর ৩ রোগী মারা গেছে। স্বজনরা অভিযোগ করছেন, আগুন লাগার পর দায়িত্বরত ডাক্তার, নার্স কিংবা ওয়ার্ড বয় কেউ এগিয়ে আসেনি। এমন পরিস্থিতিতে রোগীর স্বজনরা তাদের সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র ও রোগীদের নিয়ে দিক্বিদিক ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। যার ফলে অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে ৩ রোগী মারা গেছে বলে রোগীদের স্বজনরা জানান।
রোগীর সঙ্গে আসা স্বজন বুলবুল ইসলাম আরটিভি নিউজকেকে বলেন, আমরা প্রথমে ১২ নম্বর বেডের রোগীর সামনে সিলিন্ডারের পাইপ থেকে ধোঁয়া দেখতে পাই। তারপর সে ধোঁয়া নেভাতে গেলেই বাঁধে বিপত্তি। মুহূর্তেই আগুন ধরে যায় এবং তা সেন্ট্রাল এসিতে চলে ছড়িয়ে যায়।
তিনি বলেন, তারপর আমরা আমাদের রোগী নিয়ে ছোটাছুটি করতে থাকি। কিন্তু এত ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেলেও আগুনের সময় কোনও একটা ডাক্তার, নার্স কিংবা ওয়ার্ড বয় কেউ তাদের বাঁচাতে আসেনি।
এ বিষয়ে ঢামেক পরিচালক বলেন, আমরা আগুনের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে এসেছি। আমরা সবাই মিলে সব রোগীকে অন্য আইসিউতে স্থানান্তর করি। পরে আমরা এসে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় স্বল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি।
উল্লেখ্য, সকালে ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য বরাদ্দ আইসিইউতে আগুনের ঘটনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (৪৮), কাজী গোলাম মোস্তফা (৬৬) ও কিশোর চন্দ্র রায় (৫৮)।
বাংলাদেশ সময়: ৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ ২০২১
protidin-somoy.com | anayet mojomdar
Development by: webnewsdesign.com